ক্রিমিয়ার সেভেস্তাপোল বন্দরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ সময় একটি শিপইয়ার্ডে আগুন ধরে যায়। এছাড়া দুইটি জাহাজও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে এ হামলা চালায়। এ হামলায় ক্রিমিয়ার সেভাস্তাপোল বন্দর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

জানা গেছে, ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ এই শহরে রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের জাহাজ, ডুবোজাহাজ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।

মস্কো জানিয়েছে, এ হামলায় ১০টি মিসাইল ছোড়া হয়। তবে পাল্টা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি করে রাশিয়া। এর পাশাপাশি, বিস্ফোরক বোঝাই ৩টি ড্রোন স্পিডবোট দিয়েও হামলার চেষ্টা করা হয়। তবে সেগুলো আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে দেয় রুশ টহল বোট।

ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ এই শহরে রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের জাহাজ ও ডুবোজাহাজ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ইউক্রেন এই হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সে দেশ অবশ্য রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। এমন পদক্ষেপ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা সামরিক অভিযানে সাহায্য করে বলে ইউক্রেন মনে করে।

রাশিয়াও ইউক্রেনের ওপর লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে কৃষ্ণসাগর উপকূলের বন্দরগুলোর বিকল্প হিসেবে ইউক্রেন নদীপথে খাদ্যশস্য রপ্তানির যে উদ্যোগ নিচ্ছে, সেই প্রচেষ্টা বিফল করতে মস্কো ইউক্রেনের নদীবন্দরগুলোর ওপর হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। দানিয়ুব নদীর তীরে ইদমাইল বন্দরে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ও বেসামরিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে গতকাল আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন। এ ছাড়া ওডেসা ও মিকোলাইভ অঞ্চলেও রাশিয়া হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। ওডেসার আঞ্চলিক গভর্নর গতকাল টেলিগ্রাম চ্যানেলে নতুন হামলার কথা জানিয়েছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, গত প্রায় তিন মাস ধরে ইউক্রেনের পাল্টা সামরিক অভিযানে কোনো সাফল্য আসেনি। ভ্লাদিভোস্তক শহরে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ইউক্রেন যতদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে, রাশিয়া ততদিন সামরিক অভিযান বন্ধ করবে না।

এদিকে ইউক্রেন সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে বলে দাবি করছে। সে দেশের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার শ্তুপুন গত সোমবার বলেন, স্থলবাহিনী দিনে ৫০ থেকে ২০০ মিটার পুনর্দখল করছে। সৈন্যদের নিরাপত্তার খাতিরে সেনাবাহিনী আরও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে না। তার মতে, কাউন্টার অফেনসিভ অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন প্রায় ২৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে। সামরিক বাহিনীর অন্য এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে রোবোতিনে শহরের কাছে বিশেষ সাফল্য পাওয়া গেছে।